স্বাধীনতা বিরোধীরা ভাস্কর্যের মতো মুজিবকোটেও যন্ত্রনা অনুভব করে-নুরুল আজিম রনি
মুজিবকোট আজ বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের একটি স্বকিয়তা বহন করে।
মোগল, ইংরেজদের প্রভাব ও শাসন আমল ছিল প্রায় ৫০০ বছরের। মোগল রাজাদের পোষাকে আভিজাত্য ছিল। কিন্তু সে আভিজাত্য রাজপরিবারের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। ব্রিটিশ শাসনআমলে ইংরেজরা বাংলায় আসার পর বাংলার বাবু, জমিদার, রাজাদের শরীরে ব্রিটিশ রাজপোশাকের প্রচলনের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে। মোগল রাজ পোষাকের মতোই ইংরেজদের পোশাকও সাধারণ মানুষের মধ্যে কোন অনুভূতি জাগ্রত করতে পারেনি। পাকিস্তান শাসন আমলে মুহাম্মদ আলী জিন্নাহকেও বাঙালিরা অনুসরন করেনি। অথচ জিন্নাহ্ ছিলেন পোষাকের স্টাইলিষ্ট সজ্জিত পুরুষ।
কিন্তু স্বাধীনতার মাত্র কয়েকবছর আগে থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এমন একটি পোষাক পরিধান করলেন যা বাঙালিরা গর্বের সাথে লুফে নিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিশেষ সেই পোশাক ছিলো সাদা পাঞ্জাবি-পায়জামার সাথে হাতকাটা কালো রংয়ের একটি বিশেষ কোট। ৬ বোতামের কালো কোটটি উঁচু-গলা বিশিষ্ট ও নিচের অংশে আছে দুটি পকেট। এখানে অন্য কোন রং-স্টাইল বা ভিন্নতা ছিল না। সাদা পাঞ্জাবি-পায়জামার সাথেই তিনি এই কোটটা পড়তেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এই মুজিবকোটকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ‘ফ্যাশন আইকন’ মনে করা হয়। বাংলাদেশের গন্ডি পাড় হয়ে এই মুজিব কোট বিশ্ববাসীর কাছেও পরিচিতি লাভ করেছে। যার প্রমান ২০১২ সালে টাইম সাময়িকীর জরিপ। এই জরিপে পৃথিবীর শীর্ষ ১০ রাজনৈতিক নেতার ফ্যাশনের
তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল। এর মধ্যে স্থান পায় নেহেরু কোট। মহাত্মা গান্ধীর খাদি কাপড়ের ধুতি ও চাদর। চে গুয়েভারার মিলিটারি কোট ও ক্যাপ। ফিলিস্তিনি নেতা ইয়াসির আরাফাতের মাথায় জড়ানো রুমাল। এবং আমার সোনার বাংলার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুজিব কোট।
মুজিবকোট আজ বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের একটি স্বকিয়তা বহন করে। একটি আদর্শ, বিশ্বাস ও শক্তি ধারন করে। স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তির এই ‘মুজিবকোর্ট’ নিয়েও তাই স্বাধীনতা বিরোধি শক্তির আছে বিশেষ ‘ভয়’। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের মতো মুজিবকোর্ট দেখে তারা নিজেদের পুরানো যন্ত্রনাকে নতুন করে অনুভব করে। আর এ কারনে মুজিবকোর্ট নিয়ে নতুন করে বিতর্ক তৈরীতে তারা কাজ করছে।
সম্প্রতি কুষ্টিয়াতে মুজিব ভাস্কর্য ভাঙার সাথে জড়িতদের শরীরে ‘দেশীয় কটি’ ছিল। পাঞ্জাবির উপরে তারা সাধারন এ কটি পরিধান করেছিল। এসকল কটি নানা ডিজাইনে বাজারে বিক্রি হতে আমরা দেখেছি। এই সাধারন কটি কে ‘মুজিবকোট’ ঘোষনা দিয়ে অপপ্রচারে নামতে দেখা গেছে দেশের উগ্রবাদ গোষ্টিকে। উদ্দেশ্য একটা- ধীরে ধীরে এ মুজিবকোট বিতর্কিত করা। এছাড়াও আমরা দেখেছি, আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া বিএনপি জামায়াতের দোসররা হরহামেশাই এ কোর্ট ব্যবহার করছে। তাই এ বিষয়ে সবাইকে সজাগ হতে হবে। প্রয়োজনে মুজিবকোট ব্যবহারে সরকারের উচিত বিশেষ নির্দেশনা জারি করা।
নুরুল আজিম রনি-সাঃ সম্পাদক(সাবেক) চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগ।
No comments