আজ বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতানুল কবির চৌধুরীর ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী

সুলতানুল কবির চৌধুরী

বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতানুল কবির চৌধুরী
বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতানুল কবির চৌধুরী ছিলেন অদম্য সাহসী এক বীর মুক্তিযোদ্ধা। যিনি ন্যায় নীতির প্রশ্নে কোন অবস্থাতেই কাউকে ছাড় দিতেন না,দলের দুঃসময়ের কাণ্ডারী ছিলেন তিনি।
সুলতানুল কবির চৌধুরী ১৯৭২ সালে যুবলীগের চট্টগ্রাম শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিযুক্ত হন। তিনি বঙ্গবনধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হবার পর তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।ছয় মাস জেল খাটার পর তিনি মুক্তি পান।
সুলতানুল কবির নানা জুলুম-নির্যাতন সহ্য করেছেন কিন্তু কখনো বিচ্যুত হননি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে।১৯৭৫ সালের পর চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করতে যে কয়জন জ্যেষ্ঠ নেতা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন তাদের মধ্যে সুলতানুল কবির অন্যতম। আশির দশকে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে এই নেতার ত্যাগ ভুলে যাওয়ার মতো নয়।
খুব ছোটবেলা থেকে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ তথা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলেছেন নানা আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। ছাত্রজীবন থেকে তিনি রাজনীতির সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত করেছেন। এসএসসি পরিক্ষায় পাশ করার পর ১৯৬৫ সালে চট্টগ্রাম শহরের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ সিটি কলেজে ভর্তি হন। ১৯৬৭ সালে এই কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে তিনি জি.এস ও ১৯৬৯ ভি.পি নির্বাচিত হয়ে সাহসীকতার সাথে নেতৃত্ব দেন ক্যাম্পাসে। তখন থেকেই সময়ের এই সাহসী সন্তান নীতি ও আদর্শের প্রশ্নে আপোষ করেননি কখনো।
বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী ছিলেন সুলতান-উল কবির চৌধুরী। ঐতিহাসিক ৬৯'র ছাত্র-গণআন্দোলনে চট্টগ্রামের ছাত্রসমাজকে ঐক্যবদ্ধ করে যারা নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সুলতান-উল কবীর চৌধুরী ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম। ৭০'র নির্বাচন এবং ’৭১ এর মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে এই অকুতোভয় সৈনিকের ভূমিকা ছিল অনন্য। দীর্ঘ সংগ্রামের পর, অনেক ত্যাগের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হলো,হাজার বছরের শ্রেষ্ট বাঙ্গালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে। এর পর ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এর কালো রাতে ’৭১ এর পরাজিত শত্রুরা দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে।
আবারো শুরু হলো আন্দোলন সংগ্রাম। সেই আন্দোলনে ১৯৭৬ সালে গ্রেফতার হন বাঁশখালীর কিংবদন্তি সুলতান-উল কবির চৌধুরী। অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হয়ে দীর্ঘদিন কারাভোগের পর মুক্তি পেলেন তিনি। ১৯৭৮ সালে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে তিনি সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত ১৯৮৬ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বাঁশখালী থেকে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন লাভ করেন,১৯৯১ সালে পুনরায় মনোনয়ন লাভ করে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
দীর্ঘদিন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন তিনি
২০১৪ সালের আজকের এই দিনে চিরবিদায় বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতানুল কবির চৌধুরী।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের এই ত্যাগী নেতার অবদান দেশ ও জাতি আজীবন শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে।
No comments