Header Ads



আজ অধ্যাপক আলহাজ্ব আহমদ হোসেনের ২৫ তম মৃত্যুবার্ষিকী।

 

আজ অধ্যাপক আলহাজ্ব আহমদ হোসেনের ২৫ তম মৃত্যুবার্ষিকী।

অধ্যাপক আহমদ হোসেন  ৫২ এর ভাষা আন্দোলনের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়য়ের ইকবাল হলের আবাসিক ছাত্র হিসেবে ভাষা আন্দোলনে অংশ নেন।

চট্টগ্রামের  কৃতি সন্তান,  বিশিষ্ট  শিক্ষাবিদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা আন্দোলনের সংগঠক অধ্যাপক আলহাজ্ব আহমদ হোসেনের আজ ২৫ তম মৃত্যুবার্ষিকী।

মরহুম অধ্যাপক আহমদ হোসেন ১৯৬১ সালের ৭ মে চট্টগ্রামে তৃতীয় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবিতে যে কমিটি গঠন করা হয় তার আহ্বায়ক হিসেবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেন। এই পরিষদের আহবায়ক হিসেবে চট্টগ্রামে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিকে তিনি জনপ্রিয় করে তোলেন - লালদিঘীর মাঠ সহ সারা দেশে চট্টগ্রামে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার যৌক্তিকতা বিশ্লেষন করে সারাদেশে জনমত গড়ে তুলেন ১৯৬৪ সালে,তিনি চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদের সম্পাদক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের প্রারম্ভে তাঁর রচিত গীতি নাটক ‘'আমাদের মুক্তিসংগ্রাম'' সহ একাধিক পথ নাটক, মঞ্চ নাটক,  গীতি আলেখ্যে চট্টগ্রাম নগরীর মুসলিম হল,  বিভিন্ন কলেজ অডিটোরিয়ামে তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতাদের পরিচালনায় নিয়মিত প্রদর্শন হতো।এই গীতি নাটক গুলো ১৯৭১ এ মুক্তি পাগল বাঙালী জাতিকে মুক্তি সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ করেছিল । তিনি কবিয়াল রমেশ শীলকে নিয়ে পূর্ণাঙ্গ রচনা লিখেছিলেন।

১৯৭২ সাল থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত সিটি কলেজের সহ অধ্যক্ষ ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। অধ্যাপক আহমদ হোসেনের সবচেয়ে বড় কাজ আইস ফ্যাক্টরি রোডে চট্টগ্রাম সরকারি সিটি মহিলা উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা। সেই সময় সিটি কলেজের পাশে পরিত্যক্ত ভবনে মহিলা বিদ্যালয়টি করার প্রচেষ্টা শুরু করেন - যেটি আজ মহিলা মহাবিদ্যালয় হিসেবে খ্যাতি লাভ করেছে ।

তিনি হাটহাজারীতে তাঁর নিজ গ্রামে পৈতৃক সুত্রে পাওয়া জমিতে একটি উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। এই বিদ্যালয়টির নাম ড.শহীদুল্লাহ একাডেমী - ১৯৫০ দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ডঃ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর সরাসরি তত্ত্বাবধানে বাংলা সাহিত্যে অধ্যায়ন করেন, তিনি ছিলেন তার পিতৃতুল্য অভিবাবক। মানুষ সাধারণত নিজের নাম বা নিজের মা,বাবার নামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করে থাকেন, কিন্ত অধ্যাপক আহমদ হোসেন শিক্ষকের নামে বিদ্যালয়ের নাককরণ করে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন।

অধ্যাপক আহমদ হোসেন  ৫২ এর ভাষা আন্দোলনের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়য়ের ইকবাল হলের আবাসিক ছাত্র হিসেবে ভাষা আন্দোলনে অংশ নেন। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে অধ্যাপক আহমদ হোসেনের মেহেদিবাগ শহীদ মির্জা লেইনের বাড়ীটি কুখ্যাত পাকিস্তানি রাজাকার জাম্বু খানের নেতৃত্বে মোট ৩ বার লুঠ ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে মেহেদীবাগ তার বাড়ীর উঠোনে '" সংগ্রাম পরিষদ" এর সভা অনুষ্ঠিত হয়।

আইস ফেকটরী রোড সিটি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাতাদের তিনি একজন। কলেজের ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল এর দায়িত্ব পেয়ে তিনি রাতারাতি সিটি কলেজের  পরিত্যক্ত ভবনে এই বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করেন।  উনার মেহেদীবাগের বাড়ীটি এখনো এলাকাভিত্তিক সামাজিক, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিশ্বস্ত ঠিকানা। তিনি চট্টগ্রামের পরিছন্ন ও নন্দিত রাজনীতিবিদ - কোতোয়ালী থানা আাওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক,১৯৯০ দশকে খুব অল্প বয়সে স্বৈরাচার সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে অংশ গ্রহন করে জেল জুলুম সহ্য করা সংগ্রামী ছাত্রলীগ নেতা - জনাব হাসান মনসুর এর শ্রদ্ধেয় পিতা।

মরহুম  অধ্যাপক আহমদ হোসেন  চলাফেরা, কথাবার্তায় মানুষকে কখনো কষ্ট দেননি। তার মুখ থেকে কটু কথা কেউ শুনেনি। তিনি ছিলেন  সর্বজন  শ্রদ্ধেয় । আজ তার ২৫ তম মৃত্যুবার্ষিকীতে - তাকে গভীরভাবে স্মরন করি। দেশপ্রেমিক,নিরহংকারী, প্রগতিবাদী এবং বিনয়ী এই গুণী শিক্ষাবিদ জাতির ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবেন । মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।  মহান আল্লাহ তাকে জান্নাতবাসী করুন-আমিন।

No comments

Theme images by merrymoonmary. Powered by Blogger.